নোয়াখালীতে গত বছরের শেষ প্রান্তিকে নারী-শিশু নির্যাতন ও ধর্ষনের ঘটনা তুলনামূলক কমে এসেছে। এক বছরে নারী ও শিশু নির্যাতন সংক্রান্ত ৫৭৮ টি মামলা রুজু হলেও নিষ্পত্তি হয়েছে ২ হাজার ৭৪ টি।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নোয়াখালী নারী অধিকার জোট স্থানীয় রেডক্রিসেন্ট চাইনিজ রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলায় ২২টি নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে নয়জন নারী ও শিশু-কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন।
এর আগে ওই বছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলায় ৩৯টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। যার মধ্যে ২৬টি শিশু-কিশোরী ও নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। এছাড়া ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ৩৮টি সহিংসতার ঘটনায় ২১জন ধর্ষণের শিকার হয়ে ছিলেন।
প্রতিবেদনে নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনালের বরাত দিয়ে আরও বলা হয়, গত বছর নোয়াখালীতে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় মোট ৫৭৮টি মামলা রুজু করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে নতুন-পুরোনো ২ হাজার ৭৪টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে নয়টি সুপারিশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরমধ্যে, প্রতিটি সহিংসতা গণমাধ্যমে ফলোআপ করা, ভুক্তভোগীকে আইনী সহায়তার পাশাপাশি পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা, রাস্তাঘাটসহ গণপরিবহনে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো, ঘটনা যাতে না ঘটে তার জন্য কাজ করা, ঘরের বাহিরে নারীদের চলাচলের পরিবেশ গড়ে তোলা, এ সংক্রান্ত গ্রাম্য সালিশ বন্ধ করা, দ্রুততম সময়ে বিচারিক কার্যক্রম শেষ করা, অপরাধীদের রাজনৈতিক প্রশ্রয় না দেওয়া এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও খেলাধূলার চর্চা বৃদ্ধি করা।
নারী অধিকার জোটের আহ্বায়ক লায়লা পারভীন বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে সহিংসতার সংখ্যা নিরূপণ করা হয়েছে। তবে অনেক ঘটনা মিডিয়ায় আসে না। ভবিষ্যতে সেগুলোকেও প্রতিবেদনের আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
সংগঠনের সদস্য সচিব মনোয়ারা মিনু বলেন, নারীদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করছে নারী অধিকার জোট। ইতোমধ্যে নারীরা জাগ্রত হয়ে গ্রাম ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলাসহ প্রশাসনের আন্তরিকতায় সহিংসতা কমে এসেছে। এ ধারা অব্যাহত রাখতে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে নারী অধিকার জোটের সদস্যদের মধ্যে উন্নয়ন কর্মী ফৌজিয়া নাজনীন, রৌশন আক্তার লাকী, ফারজানা তিথি, নুরের নাহার পপি উপস্থিত ছিলেন।