• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৫৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
আমাদের দেশকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে: মো. শাহজাহান ফ্যাসিস্ট শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে: জামায়াত নেতা ইয়াছিন আরাফাত নোবিপ্রবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত পাসপোর্টে হয়রানি বন্ধ ও জনগনের সাথে সুসম্পর্ক উন্নয়নে বিদায়ী জেলা পুলিশের ডিআইও-১ এর প্রশংসনীয় উদ্যোগ! নোয়াখালীতে “দ্যা হান্ড্রেড বল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট” এর শুভ উদ্বোধন সুধারামে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে- কামরুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের আর্তনাদ কবিরহাটে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ( বিএমএসএফ)’র  সাধারণ সভা জেলা প্রশাসকের কাছে ৪ শত কম্বল হস্তান্তর করলো ‘আশা’ সোনাপুর পৌর বাসস্ট্যান্ডটি যেভাবে মার্কেটে পরিণত হচ্ছে

নোয়াখালীর বিআরটিএ অফিস দালালদের নিয়ন্ত্রণে

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০২৪

নোয়াখালী :
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) নোয়াখালী অফিসের সব সেবা ঘুষ, দুর্নীতি ও দালালচক্রে আটকা পড়েছে। দালাল পরিবেষ্টিত এ অফিসে দীর্ঘদিন ধরে থাকা কিছু অসাধু কর্মকর্তা নিজেদের ‘বিশ্বস্ত দালালচক্র’ তৈরি করেছেন। তাদের কাছেই জিম্মি হয়ে পড়েছেন এই অফিসের সেবাপ্রার্থীরা।

জানা গেছে, নোয়াখালীর বিআরটিএ অফিসে যানবাহনের রেজিস্ট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, গাড়ির কাগজপত্র ও ফিটনেস পরীক্ষাসহ প্রায় সব কাজই হয়রানির পাশাপাশি প্রতারণার শিকারও হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এতে সরকার নির্ধারিত বিভিন্ন কাজের ফির চেয়ে লাগে অতিরিক্ত অর্থ। সবকিছুই হয় অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের দিকনির্দেশনা মোতাবেক।

নোয়াখালী জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের নিচতলার বিআরটিএ অফিস। ওই কার্যালয় থেকে গ্রাহক যানবাহন ও মোটরসাইকেল নিবন্ধন, যানবাহনের রুট পারমিট ও ড্রাইভিং লাইসেন্সের সেবা নেন। ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন ফি ৫১৮ টাকা। লাইসেন্স ফি দুই হাজার ৬০০ টাকা। আর মোটরসাইকেল নিবন্ধন ফি ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা।

অভিযোগ রয়েছে, বিআরটিএ’র কিছু কর্মচারী ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ৭/৮ হাজার এবং মোটরসাইকেল নিবন্ধনের ৪/৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত নিচ্ছেন দালালদের মাধ্যমে। নোয়াখালী বিআরটিএ মাস্টাররোলে চাকরি করছেন কয়েজন কর্মচারী। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ব্যাপক হয়রানি ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ। সিএনজিচালিত অটোরিকশার রেজিস্ট্রেশন করতে নির্ধারিত সরকারি ফি ব্যাংকে জমা দেওয়ার পরেও ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় ঘুষ হিসেবে। সিএনজিচালিত অটোরিকশার মালিকানা পরিবর্তন করতে নির্ধারিত সরকারি ফি ব্যাংকে জমা দেওয়ার পরেও ৩ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় ঘুষ হিসেবে। ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য পরীক্ষা পাশ করতে নির্ধারিত সরকারি ফি ব্যাংকে জমা দেওয়ার পরেও ২ হাজার থেকে ৩ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয় ঘুষ হিসেবে। এসব অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

সোমবার সকাল ১১ টার দিকে নোয়াখালী বিআরটিএ অফিসে গেলে দেখা যায়, এ অফিসের দালাল জহির, মিজান, সৌরভ, মিনহাজ, আতিকুর রহমান, দেলোয়ার হোসেন ও ফারুক অফিসের চেয়ার টেবিলে বসে দালালি করছে। সাংবাদিক আসার খবর শুনে দালালরা চেয়ার টেবিল থেকে উঠে অফিসের ভিতরে হাটাহাটি শুরু করে। নোয়াখালীর বিআরটিএ অফিসের সহকারী পরিচালক প্রকৌশলী আতিকুর রহমান এসব দালাল নিয়ন্ত্রণ করেন। দালাদের মাধ্যমেই তিনি অফিস খরচ নিয়ে থাকেন বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ভুক্তভোগী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরটিএ অফিসের এক দালাল জানান, এ অফিসের সহকারী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ারিং আতিকুর রহমান দালাল নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। তিনি দালাল মিনহাজ এর মাধ্যমে ঘুষের টাকা লেনদেন করেন। দীর্ঘ ১২/১৫ বছর ধরে এই অফিসে প্রায় ৩০ জন দালাল প্রতিনিয়ত অফিসে এসে জনসাধারণকে হয়রানি করছে। কিছু কিছু দালাল এখানকার স্থানীয় হওয়ায় কেউ ভয়ে প্রতিবাদ করেন না।

সোনাইমুড়ী উপজেলার বজরা ইউনিয়নের ছনগাঁও গ্রামের আক্কাছ আলীর ছেলে ওমান প্রবাসী শাহাবুদ্দিন জানান, গত ১০ নভেম্বর মাইজদীর YAMAHA হোন্ডা শোরুমে জান মোটরসাইকেল কিনতে। ২ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা দিয়ে মোটরসাইকেল ক্রয়ের পর শোরুম ম্যানেজার সাজ্জাদুর রহমান বলেন তাদের সাথে নোয়াখালী বিআরটির কর্মকর্তাদেশ যার সাথে গোপন যোগাযোগ রয়েছে। মোটরসাইকেলটির কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে ৩২ হাজার টাকা দিলেই তারা কাগজপত্র করে দেবেন। তবে সরকারি ফি ব্যাংকে জমা দিতে হবে এর অর্ধেক টাকা। বাকি টাকা কর্মকর্তা কর্মচারীরা ঘুষ নিবেন। আর না হয় কাজ করবেন না।

এক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, বাসের ড্রাইভার ফেরদৌস আলম পার্শ্ববর্তী জেলা লক্ষ্মীপুরে তার বাড়ি। গত ৪ বছর পূর্বে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স হারিয়ে যায়। থানায় হারিয়েছে মর্মে জিডি করেন। এখন তিনি নোয়াখালীর ঠিকানা দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স করতে নোয়াখালী বিআরটিএ অফিসের নিয়োগকৃত দালাল সৌরভ ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেছেন।

বিআরটিএ অফিসের হিসাব সহকারী মাসুদ আলম জানান, এখন সব আবেদন অনলাইনে। তাই ঘুষ নেওয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে কেউ যদি খুশি হয়ে কিছু দেয় তাহলে নিয়ে থাকেন।

মোটরযান পরিদর্শক মাহবুব রব্বানী বলেন, তিনি এইসব দালালদের চেনেন না। তিনি একটি মিটিংয়ে রয়েছেন বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান।

নোয়াখালী বিআরটিএ সহকারী পরিচালক ইঞ্জিনিয়ারিং প্রকৌশলী আতিকুর রহমানের বক্তব্য নিতে তার অফিসে গিয়ে পাওয়া যায়নি। তার মুঠোফোনটি ও বন্ধ রয়েছে। 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ
No comments to show.