শীতের সকাল সবুজের ডগায় শুভ্র শিশির আর কুয়াশার জড়িয়ে আছে নোয়াখালীর একমাত্র বিচিন্ন দ্বীপউপজেলা হাতিয়ার জনপদ। একটানা সুর করে গান গায় পাখি। এলোমেলো রাস্তা আর ঘনকুয়াশা মাঝেসারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে আছে মাইলের পর মাইল খেজুর গাছ ।
শীত এগিয়ে আসছে। অযত্ন ও অবহেলায় বেড়ে উঠা খেজুর গাছের কদরও বাড়ে শীত এলেই। খেজুর গাছ সুমিষ্টরস দেয়। রস থেকে তৈরি হয় গুড় ও পাটালি। যার সাদ ও ঘ্রাণ আলাদা। পুরো শীত মৌসুমে চলে পিঠা-পুলি আর পায়েস খাওয়ার পালা।
নিঝুম দ্বীপের স্থানীয় গাছি খেজুরের রস সংগ্রহকারী খোকন মিয়া বলেন, আমি এবার ১০০ খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করছি। প্রথম দিকে রস কম সংগ্রহ হলেও শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রসের পরিমাণ বেড়েছে। খেজুরের রস সংগ্রহ করে কড়াইতে জ্বাল দিই। জ্বাল দিয়ে তারপর গুড় বানাই। প্রতিদিন ১০-১২ কেজি গুড় বিক্রি করি। প্রতি কেজি গুড়ের দাম ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। সকালে অনেকেই খেজুরের রস খেতে আসে। প্রতি গ্লাস রস ১০ টাকা করে। কাঁচা রস এলাকার বিভিন্ন স্থানে ও হাটে-বাজারে বিক্রি করি।
স্থানীয় বাসিন্দা আসিফ মিয়া বললেন, খেজুরের রস আমার কাছে খুবই পছন্দের। খেতেও দারুণ। সব বয়সের মানুষ খেজুরের রস ও গুড় পছন্দ করে। আমার বাড়ির পাশে থাকায় সকালে ঘুম থেকে উঠেই খেজুরের রস খেতে আসি। বাড়ির জন্য কিনেও নিয়ে যাই।
খেজুর গাছ ফসলের কোনো ক্ষতি করে না। এ গাছের জন্য বাড়তি কোনো খরচ করতে হয় না। ঝোপ-জঙ্গলে কোনো যত্ন ছাড়াই বেড়ে ওঠে। শুধুমাত্র মৌসুম এলেই নিয়মিত গাছ পরিষ্কার করে রস সংগ্রহ করা হয়। রস, গুড়, পাটালি ছাড়াও খেজুর গাছের পাতা দিয়ে মাদুর তৈরি ও জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার হয়।
পরিকল্পিতভাবে খেজুর গাছ বৃদ্ধি করা হলে দেশের গুড় পাটালির চাহিদা মেটানোর পর বিদেশেও রপ্তানি করা হলে অর্থ উপার্জন করার সুযোগ রয়েছে।