দেখতে দেখতে হাজির ২০২৩। আর নতুন বছরে আমাদের প্রযুক্তি নির্ভরতা আরো বাড়বে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। ২০২৩ সালে আরো রমরমা বাড়বে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও এক্সটেন্ডেড রিয়েলিটির। এবার জেনে নেয়া যাক, প্রযুক্তিতে কী কী বড়সড় বদল আসতে যাচ্ছে নতুন বছরে।
২০২৩ সালে নাকি মেটার মতো বেশ কয়েকটি বড়সড় সোশ্যাল মিডিয়া ব্র্যান্ড এক্সটেনডেন্ট রিয়েলিটি নিয়ে আসতে যাচ্ছে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপ্লিকেশনে। এক্সটেন্ডেড রিয়েলিটির মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে একটি বিকল্প দুনিয়া, যার নাম দেওয়া হয়েছে মেটাভার্স।
আগামী দিনে তাদের এই উদ্যোগে যোগ দিতে চলেছে আরো ছোট বড় বেশ কয়েকটি সংস্থা। আগামী বছরের মধ্যে সেই প্রকল্পে আরো এগোতে চলেছে জাকারবার্গের সংস্থা। ‘3D’ পরিবেশ তৈরির কাজে হাত মিলিয়েছে অন্যান্য ছোটবড় স্টার্টআপ থেকে শুরু করে বহু সংস্থাই।
সব মিলিয়ে ২০২৩ সালে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীরা মেটাভার্সের মাধ্যমে এক অন্যতম অভিজ্ঞতার সাক্ষী হতে চলেছেন। শোনা যাচ্ছে, ২০২৩-এর মাঝামাঝি Apple-ও বাজারে আনতে চলছে একটি মিক্সড রিয়েলিটির হেডসেট। যার দামও হতে চলেছে বেশ চড়ার দিকেই। সোনিও এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির জগতে বড়সড় পদক্ষেপ রাখতে চলেছে তাদের PlayStation VR2-র মাধ্যমে।
শুধুমাত্র এক্সটেন্ডেড রিয়েলিটি নয়, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জোয়ার আসতে চলেছে নতুন বছরে। স্মার্টফোন থেকে স্মার্টটিভি, এমনকি আলো,পাখা থেকে ঘড়ি। ঘরের কাজেও প্রযুক্তির ছোঁয়া, আমাদের একটা নির্দেশে চোখের নিমেষে সারা হয়ে যাচ্ছে সমস্ত কাজ। আমাদের জীবনের অনেকটাই এখন AI সিস্টেমের উপরেই নির্ভরশীল।
২০২৩ সালে সেই নির্ভরতা অনেকটাই বাড়বে। আগামী বছরে AI চ্যাটবটসের রমরমা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে সবচেয়ে জনপ্রিয় চ্যাটবট হল Open AI-এর ChatGPT। বহু টেক-বিশেষজ্ঞই এই টুলটিকে স্বীকৃতি দিয়েছেন ইতিমধ্যেই।
তাদের দাবি, এটিকে ঠিক মতো কাজে লাগাতে পারলে ভবিষ্যতে মানুষের বহু কাজকেই লাঘব করতে পারে এই টুলটি। AI-র সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আগামী দিনে আর অনেক বেশি মানুষের মতো হয়ে উঠতে চলেছে রোবটেরা। আজ থেকে নয়, ১৯৫৬ সাল থেকে বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়ে আসছে রোবট। বহু শিল্পক্ষেত্রে মানুষের বিকল্প হিসেবে কাজে লাগানো হচ্ছে রোবটকে। যা লোকবল কমিয়ে কাজের মান উন্নত করতে সাহায্য করছে। মানুষের কাজ ক্রমশ কমিয়ে দিচ্ছে রোবট। সেটা একদিক থেকে যেমন আশার কথা, তেমনই দুশ্চিন্তারও। কারণ তাতে বহু সংখ্যক মানুষের কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা।
২০২৩ সালে সেই সম্ভাবনা আরো বাড়তে যাচ্ছে বলেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক এমন এক ধরণের রোবটের উপরে কাজ করছেন। যা দক্ষভাবে আপেল চাষে সহায়তা করছে। আপেল পাকা থেকে শুরু করে গাছ থেকে আপেল তোলা পর্যন্ত, সমস্ত ধাপের তথ্য সংগ্রহ করছে AI-এর মাধ্যমে। ফলে মানুষের থেকেও দক্ষ ও নিপুণ ভাবে ঐ কাজ সেরে ফেলছে রোবটেরা। প্রযুক্তির এই উন্নতির জের খুব শিগগিরই মানবজীবনে পড়তে চলেছে। আর জীবিকাহীন হতে চলেছেন বহু মানুষ, এমনটাই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞ মহলের।
সূত্র: এই সময়