নোয়াখালী :
নোয়াখালীর বিভিন্ন শ্রেণী, পেশার মানুষের ক্লান্তির প্রেরণায় শহরের মাইজদী বালুর মাঠে শুরু হয়েছে নোয়াখালী শিল্প ও বাণিজ্য মেলা।
চেম্বার এন্ড কমার্স নোয়াখালী পর্ষদের আয়োজনে ও উদ্যোগে এ মেলা শুরু হয়েছে দীর্ঘ ৮ বছর পর। ১৮মে নোয়াখালী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও চেম্বারের সহ সভাপতি আবদুল ওয়াদুদ পিণ্টু এ মেলার উদ্বোধন করেন।
সূত্র জানায়, মহামারী করোনাসহ বিভিন্ন কারণে, বিভিন্ন মৌসুমে জেলার কিছু উদ্যোক্তা মহলের উদ্যোগের ফলশ্রুতিতে তারা নিজেদের ঘুটিয়ে রেখেছিলেন।
চলতি বৈশাখ মাসে পুরো দেশব্যাপী বিভিন্ন আঙ্গিকে একাধিক জেলায় এমন মেলা চললেও নোয়াখালীতে এবার কোথাও এমন আয়োজনের খবর নেই।
তবে উদ্বোধনের পর এ মেলায় শিশু, কিশোর হতে শুরু করে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের অংশ গ্রহণে প্রাণবন্ত হওয়ার কথা থাকলেও বিদ্যুতের অব্যাহত বিপর্যয় ও জ্যৈষ্ঠের প্রচন্ড গরমের তাপদাহের বলয়ে মেলাটি এখনো আশানুরুপ জমে ওঠেনি।
তবুও সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সন্ধ্যের পর কিছু কর্মজীবি বাবা, মা তাদের বাচ্চা নিয়ে এখানে ঘুরছেন। শিশুরাও নানা আয়োজনে ও আনন্দে সুখ আর সৌন্দর্য্য উপভোগ করছেন।
শহরের কোথাও শিশুদের নিয়ে সামাজিক বন্ধনে বাবা, মা ও পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর নান্দনিক বিনোদন কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। মেলায় শিশুদেও এমন উপভোগের উপজীব্যতাকে প্রাধাণ্য দিয়ে সেসবের সম্ভারেই সাধারণ মানুষকে নান্দনিকতায় বিকশিত করার প্রত্যয় নিয়েই এর যাত্রা শুরু করেছে।
শিশুদের জন্যে প্রাণান্তকর সব ধরনের বিনোদন সামগ্রীতে সাজানো রয়েছে। শিশুদের প্রাণোচ্ছ্বাস আর প্রাণো”ঞ্চল করতে নানা বর্র্ণিল রাইডার রয়েছে এখানে।
এছাড়া, কিশোর ও বিভিন্ন বয়সী নারীদের জন্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের বর্ণিল পোষাকের দোকান। আধুনিক ও দেশীয় সংস্কৃতির আদলে রয়েছে খাওয়ারও স্টল। এ মেলায় বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্নতায় রয়েছে ২টি বড় ধরনের জেনারেটর ব্যবস্থা রয়েছে সার্বক্ষণিক।
নোয়াখালী পৌরসভার লক্ষীনারায়নপুর বৈশাখী থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন রাফি জানান, শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্য মেলার ভেতরে দারুন সব ইভেন্ট রয়েছে। ড্রাগন রেল ভ্রমণ, নৌকা বাইচ, পামপিং স্লিপার, ভূতের বাড়ি, নাগরদোলা, ওয়াটার রোলার, ওয়াটার বোটসহ রয়েছে বাহারী রকমের খাবারের দোকান, বাহারী সাজ সজ্জায় কসমেটিকস, খেলনা, পোশাক সামগ্রীর দোকান। রয়েছে প্রবেশ টিকিটের মাধ্যমে আকর্ষণীয় পুরস্কারে সাপ্তাহিক র্যাফেল ড্র।
মেলা পর্ষদের একজন দায়িত্বশীল মানুষ দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমরা শুধুমাত্র বিদ্যুতের ওপর নির্ভর করে এ মেলাটি করছিনা। এখানে নিজস্ব বৈদ্যুতিক ব্যবস্থাপনা যোগ রেখেই এ আয়োজনটি হাতে নেয়া হয়েছে। এখানে শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক নির্ভরতার বদলে রয়েছে ২টি বড় ধরনের জেনারেটর। যেগুলোয় প্রতিদিনই লিটারে লিটারে তেল জ¦লছে। যাতে পুরো চৌহদ্দিতে বাতি, আলোকসজ্জা ও রাইডারগুলো চলতে কোন ধরনের সমস্যা হয়না। বিদ্যুৎ সংযোগ বিষয়ে বলেন, আমরা সাময়িক সময়ের জন্যে যে পরিমাণ বিদ্যুতের দরকার, মাত্র সেটুকুর সংযোগ নিয়েছি।
এ মেলার সাথে সংশ্লিষ্ট এক হাজার লোকের কর্মসংস্থান জড়িত রয়েছে বলে জানান দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, মেলায় সামাজিকতা রক্ষা করেই সব ধরনের ব্যবস্থাপনায় সাজানো হয়েছে। মেলাঙ্গনেই ইবাদতের জন্যে রয়েছে একটি দৃষ্টিনন্দন কাড়া কাঠের মসজিদ।
এ সীমানায় নেই কোন ধরনের অশ্লীল নাচ, গান ও বখাটেপনার উত্তেজনা। নোয়াখালী পুলিশ প্রশাসনও এ এলাকার সামাজিক শান্তি ও শৃঙ্খলা রক্ষায় যথেষ্ঠ আন্তরিক বলেও জানান তিনি।
দেলোয়ার হোসেন বলেন, শুধুমাত্র শিশুদের আনন্দ দিতেই এমন মেলার আয়োজন করেছেন তারা। তবে অন্যান্য সময়ে এ চৌহদ্দিতে দু’ শতাধিক স্টল বিক্রয় হলেও এবার স্থান পেয়েছে মাত্র ৬৮টি ফলে বাণিজ্যিকভাবে তারা মেলার আয় ব্যয় নিয়ে অনেকটাই চিন্তিত। কেননা, মেলাটির সার্বিক সৌন্দর্য্য ও সৌখিনতায় শ্রীবৃদ্ধিতে অনেক অর্থের পুঁজি দেয়া হলেও বিপরীতে সে পরিমাণে লাভের পাল্লা এখনো শুণ্যতায় প্রায়।