• শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
কাদের মির্জার নিপীড়নের শিকার বিএনপি-জামায়াত-আওয়ামী লীগও জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে টিকা বিষয়ক সেমিনার ডিজেল জেনারেটর নাকি গ্যাসোলিন জেনারেটর কোনটি ব্যবহার করা উচিৎ নোয়াখালী বিএডিসিতে তথ্য চাইতে গেলে দুই সাংবাদিকের উপর হামলা গণপূর্ত বিভাগের বন্দোবস্তের পাঁচগুণ জায়গা অবৈধভাবে দখল নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকসহ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ নোয়াখালীতে  প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন  ১০ম গ্রেড সহকারীদের শুধু দাবী নয় এটা তাদের নূন্যতম অধিকার নোয়াখালীতে স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা,স্বামী আটক টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীতে আবার বন্যার আশঙ্কা

প্রযুক্তির চিকিৎসায় ক্যান্সার মুক্ত

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২২

এলিসা নামের এক কিশোরীর দেহে এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা চালিয়ে তার শরীর থেকে ক্যান্সার দূর করা হয়েছে। কিন্তু এর আগে তার দেহে লিউকেমিয়ার প্রচলিত সব চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষামূলকভাবে নতুন ওষুধটি প্রয়োগের পর তার দেহে অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে এবং তার দেহের রোগ প্রতিরোধী ব্যবস্থা পুনরায় সক্রিয় হয়ে ওঠেছে। এলিসা এখন ক্যান্সার মুক্ত।

এলিসার বয়স মাত্র ১৩। সবশেষ পরীক্ষায় তার দেহে ক্যান্সারের লক্ষণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। চিকিৎসকরা বলছেন, এলিসার দেহে জিনগত পরিবর্তনের যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে, এই চিকিৎসা বিজ্ঞানে খুব দ্রুত অগ্রগতি ঘটছে এবং নানা রোগের চিকিৎসায় এই পদ্ধতির সফল হওয়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে।

বেস এডিটিং : বায়োলজিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং-এর এই পদ্ধতির নাম ‘বেস এডিটিং।’গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালের ডাক্তাররা এই পদ্ধতিতেই এলিসাকে লিউকেমিয়া থেকে সারিয়ে তুলেছেন। ওষুধ প্রয়োগের ছয় মাস পরে দেখা গেছে, এলিসার শরীরে ক্যান্সার শনাক্ত করা যাচ্ছে না। তবে রোগটি আবারো ফিরে আসে কি না- এই আশঙ্কায় তাকে এখনো পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

ইংল্যান্ডের লেস্টার শহরের মেয়ে এলিসা। গত বছরের মে মাসে তার দেহে টি-সেল একিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকেমিয়া ধরা পড়ে। টি-সেল হচ্ছে, শরীরের অভিভাবকের মতো। এই সেল শরীরের ভেতরে হুমকি সৃষ্টিকারী উপাদান ধ্বংস করে দেয়। কিন্তু এলিসার দেহে ক্যান্সার সেলগুলো বিপদজনক হয়ে উঠেছিল এবং চলে গিয়েছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে।

তার দেহে ক্যান্সারের কোষগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছিল। কেমোথেরাপি এবং বোন-মেরো ট্রান্সপ্লান্ট করেও সেগুলো থেকে মুক্তি পাওয়া যাচ্ছিল না। ‘আমি হয়তো আসলে মারাই যেতাম,’ এলিসা বলেছেন। ওর মা কিওনা বলেন, গত বছর তিনি ভেবেছিলেন যে, তিনি হয়তো তার মেয়ের সঙ্গে শেষ ক্রিসমাস পালন করতে যাচ্ছেন। কিন্তু এরপর যা ঘটেছে, কয়েক বছর আগেও তার সবই ছিল অচিন্তনীয়। জেনেটিকসের অসাধারণ অগ্রগতির কারণেই এলিসার জীবন রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

এজন্য গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালের ডাক্তাররা যে ‘বেস এডিটিং’ পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন, সেটি মাত্র ছয় বছর আগে উদ্ভাবন করা হয়েছে। এই পদ্ধতিতে বিজ্ঞানীরা জেনেটিক কোডের একটি বিশেষ অংশকে আকারে বড় করেন এবং পরে এর মলিকুলার বা আণবিক গঠনে পরিবর্তন আনেন। এভাবে এর জেনেটিক নির্দেশনা বদলে দেওয়া হয়।

একজন দাতার কাছ থেকে সুস্থ টি-সেল নিয়ে তাতে জিনগত পরিবর্তন ঘটিয়ে সেগুলো এলিসার শরীরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়, যা তার দেহের ক্যান্সার সেলগুলোকে খুঁজে বের করে ধ্বংস করে দিতে সক্ষম। টি-সেলের বেস এডিটিং-এর কারণে এসব সেল এলিসার দেহের সুস্থ কোষেরও কোনো ক্ষতি করবে না।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই চিকিৎসা পদ্ধতি সফল হলে দ্বিতীয় বোন-মেরো প্রতিস্থাপনের পর এলিসার দেহের টি-সেলসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা পুনর্গঠিত হবে।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন এবং গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালের অধ্যাপক ওয়াসিম কাসিম বলেছেন, এলিসাই প্রথম রোগী, যাকে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে চিকিৎসা করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, জেনেটিক মেনিপুলেশন বিজ্ঞানে খুব দ্রুত অগ্রগতি ঘটছে। নানা ধরনের রোগ সারিয়ে তোলার ব্যাপারে এর অপরিসীম সম্ভাবনা রয়েছে।

চিকিৎসার জন্য এলিসা হাসপাতালে ছিল ১৬ সপ্তাহ। তিন মাস পর তার দেহে ক্যান্সারের কিছু লক্ষণ দেখা গেলেও সবশেষ দুটো পরীক্ষায় সেগুলো দেখা যায়নি। এলিসার অভিমত, ‘এটা দারুণ ঘটনা যে, আমি এই সুযোগ পেয়েছি। এজন্য আমি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে অন্য শিশুরা এই চিকিৎসা পদ্ধতিতে উপকৃত হবে।’

এলিসা ছাড়াও আরো নয়জন রোগীর ওপর এই পদ্ধতিতে চিকিৎসা পরীক্ষা চালানো হবে বলে ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। সূত্র : বিবিসি এইচএস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ
No comments to show.