নোয়াখালী প্রতিনিধি >
শিক্ষকের সাথে অসদাচরণ, গ্রুপিং সৃষ্টি ও চাকুরী বিধি পরিপন্থী ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ে শিক্ষিকা তাছলিমা বেগম কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জেলা শহরের অবস্হিত স্বনামধন্য নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের সাথে অসদাচরণ, স্কুলে গ্রুপিং সৃষ্টি ও চাকুরী বিধি পরিপন্থী এবং শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে শিক্ষিকা তাছলিমা বেগম কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে
এই বিষয়ে বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদ জানান, আমাদের বিদ্যালয়ে প্রায় ৮শত ছাত্র ছাত্রী অধ্যায়ন রত অবস্থায় আছেন । সরকারি বিধি মোতাবেক শিক্ষকদের ১৮৮ দিন কর্মদিবস হলেও বিভিন্ন দিবসের কারনে বছরে আরো কম দিনই স্কুলে পাঠদান হয়ে থাকে। এছাড়াও বিদ্যালয়ের তিন জন শিক্ষকের পদ শুন্য এবং নবম ও দশম শ্রেণির অতিরিক্ত বিশেষ ক্লাস করার নিয়ম থাকলেও ম্যাডাম ঐ বিশেষ ক্লাস করাতে চান না। সহকারী প্রধান শিক্ষক কামরুন নাহার তাকে বাচ্চা নিয়ে ক্লাসে যেতে নিষেধ করলেও তাছলিমা বেগম ক্লাসে বাচ্চা নিয়ে যাবেন বলে জানান এবং সহকারী প্রধান শিক্ষক, সহকারী শিক্ষকদের সাথে সমন্বয় করে ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষার মানোন্ননে বিশেষ ক্লাস নিতে বল্লেও তিনি অপারগতা প্রকাশ করে। তিনি প্রায়ই দেরিতে বিদ্যালয়ে আসে, ক্লাসে তার বাচ্চা নিয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠ গ্রহনে বিঘ্ন ঘটে বলে কয়েকজন অভিভাবক আমাকে মৌলিক অভিযোগ করেন। এ ব্যাপারে আমি তাকে ২২ মে২০২৩ইং মৌখিকভাবে সতর্ক করলে তার মানহানি হয়েছে বলে সে ২৩ মে ২০২৩’ইং শিক্ষকদের একত্রিত করে আমার বিরুদ্ধাচারন করে, তাদের কে ক্লাসে না যেতে উদ্ভুদ্ধ করে। এছাড়াও সে আমার অফিস রুমে এসে রুঢ় ব্যবহার ও অশোভন আচরণ করেন এবং ২৪ মে বিদ্যালয় আওয়ার শেষে অফিস থেকে বের হলে তাছলিমা ম্যাডাম বাচ্চাসহ প্রচন্ড বৃষ্টিতে ভিজে আমার সামনে দাড়িয়ে সিনক্রিয়েট করে বলে, তাকে বাচ্চা নিয়ে ক্লাস নেওয়ার অনুমতি দিতে হবে।
এ বিষয়ে পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষিকা তাছলিমা বেগম কে ৫ জুন ২০২৩ইং প্রথম কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়, সন্তোষজনক উত্তর না দিয়ে, শিক্ষিকা তাছলিমা ও তার স্বামী বিভিন্ন লোকজনের কাছে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে। তাই শৃঙ্খলা ভংঙ্গ করায় ১৮ই সেপ্টেম্বর দ্বিতীয়বার কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। এতেও সে সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে, স্কুলের শিক্ষকদের মধ্যে গ্রুপিংয়ের চেষ্টা করে। তাই স্কুলের পরিচালনা পর্ষদ ৫ই অক্টোবর ২০২৩ তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্হা গ্রহনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। এর প্রেক্ষিতে ১২ই অক্টোবর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীমা আক্তার কে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে শিক্ষিকা তাছলিমা বেগম কে ফোন দিলেও তার ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া যায় নি।
নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ে সভাপতি এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন বলেন, আমাদের স্কুলে শিক্ষার উন্নত ও বিদ্যালয়ের সুনাম আছে। শিক্ষিকা তাছলিমা বেগম বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বিঘ্ন সৃষ্টি করায় ও চাকরি বিধি পরিপন্থী কাজে লিপ্ত হওয়ায় পরিচালনা পরিষদ তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্হা গ্রহণে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন এবং তিন বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনও কোন কোন চিঠি পাইনি। চিঠি পেলে তদন্ত করে পরবর্তীতে জানানো হবে।