নোয়াখালীতে পাসপোর্ট করতে পদে পদে হয়রানি শিকার হতে হচ্ছে সেবাগ্রহীতাদের।হয়রানির বহুমাত্রিক দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম দালালদের দৌরাত্ম্য।৫ আগস্টের পর মাসখানেক বন্ধ থাকলেও ফের সক্রিয় উঠছে দালাল চক্র। হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সামনে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে ১০ দালাল। অভিযোগ আছে এইসব দালালদের রয়েছে আলাদা আলাদা সাংকেতিক চিহ্ন।অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে ঐসব দালালরা সেবাগ্রহীতাদের নানাবিধ সেবা দিয়ে থাকেন যারা তাদের সাংকেতিক চিহ্ন ব্যবহার করে।ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে জানা যায়,প্রতিদিন পাসপোর্ট অফিসে আবেদিত অসংখ্য আবেদন বিভিন্ন অজুহাতে ফেরত দেয় অথবা বিভিন্ন ধরনের ডকুমেন্ট চেয়ে থাকেন।যেটা তাৎক্ষণিকভাবে সেবাগ্রহীতার পক্ষে সরবরাহ করা সম্ভব নয়। দালাল ছাড়া আবেদন করতে গেলে
কর্মকর্তাদের এমন চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভড়কে যান সেবাগ্রহীতারা।আর এমন আবেদনকারীদেরই টার্গেট বানায় উল্লেখিত দালালরা।বিষয়টি স্বীকার করে সহকারী পরিচালক নাহিদ নেওয়াজ জানান,”এমন হয়রানি প্রতিরোধে আমার কঠোর নির্দেশনা রয়েছে”।হয়রানির বিষয়ে উল্লেখ করে তিনি বলেন ,”হজ্বে যাওয়ার উদ্দেশ্যে স্বামী ও স্ত্রী আবেদন করেন।নিয়মানুযায়ী তাদের জাতীয় পরিচয় পত্র দেখে আবেদন গ্রহন করার কথা।কিন্তু এমন দম্পতিদের বিয়ের কাবিননামা তলব করার ঘটনাটি তার নজরে এলে তিনি সেই কর্মকর্তাকে সতর্ক করে দেন”।
পাসপোর্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, এখন প্রতিদিন প্রায় ৫০০ পাসপোর্টের আবেদন জমা হয়।যেটা আগে ৪০০ ছিলো।একটি বুথ থেকে এতো বিপুল সংখ্যক আবেদনকারীদের পাসপোর্টের সেবা দিতে হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন ষাটোর্ধ রমজান আলী।তিনি হজ্জ্বে যাবেন। তিনি জানান,সকালে ১ ঘন্টা দাড়িয়ে থেকে আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন। এখন আরো ২ ঘন্টা ধরে অপেক্ষায় আছেন আঙুলের ছাপ দেওয়ার জন্য। কখন শেষ করবেন তা তিনি বলতে পারেননি।এসময় সেখানে উপস্থিত একাধিক সেবাগ্রহীতারা এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ চেয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এবিষয়ে জেলার সাংবাদিক নূর রহমান বলেন,নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের আবেদন বিবেচনায় নিয়ে সরকার এখানে একাধিক বুথ স্হাপন করলে দীর্ঘ লাইনের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।আর দালালদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনার কোনো বিকল্প নেই বলে জানান।
একাধিক বুথ এবং দালালদের দৌরাত্ম্যের বিষয়ে নোয়াখালী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক নাহিদ নেওয়াজ বলেন,দালালদের চিহ্নিত করার কার্যক্রম চলছে। অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করা হবে।বহিরাগত দালালদের সাথে অফিসের কারো সম্পৃক্ততা পেলে তাকে রেহাই দেওয়া হবে না।এছাড়া আরো একটি বুথের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে এর আগে আমরা সদর দপ্তরকে জানিয়েছি।