ডেস্ক>
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল রোডের প্যানকেয়ার আইসিইউ হসপিটালে চিকিৎসা অবহেলায় রোগীর মৃত্যু পরবর্তী লাশ আটকিয়ে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ ওঠেছে। এ সময় অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের চেষ্টায় রোগীর স্বজনদের হুমকি,ধমকি মারধোরও করার অভিযোগ করেছেন এক স্বজন রিয়াজ উদ্দিন।
সংশ্লিষ্ট হসপিটালের সংঘটিত অনিয়ম ও দৌরাত্ম্যের বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ আগস্ট সোনাইমুড়ির আমকি গ্রামের মো. বাবর (২৪) বিষপান করেন। ওদিন রাত প্রায় ১ টার দিকে পরিবারের লোকজন তাকে নোয়াখালী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে ভর্ত্তি করেন।
জানা যায়, হাসপাতালে অবস্থান করা কতেক দালাল ওই রোগীর স্বজনদের ফুসলিয়ে প্যানকেয়ার হসপিটালে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে, ওই হসপিটালে ভর্ত্তি হলেও উন্নতমানের কোন চিকিসা না পেয়ে একপর্যায়ে ওই রোগীর মৃত্যু হয়।
রোগীর বাবা জাহাঙ্গীর আলম জানান, হসপিটাল কতৃপক্ষ পরবর্তীতে ওই রোগীর স্বজনদের মৃত্যুর খবর গোপন রেখে ৫০ হাজার টাকার বিল করেন। এ সময় তারা স্বজনদের মাত্র কয়েক ঘণ্টায় ৪৭ হাজার টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ করেন। রোগীর বাবা আরো জানান, তারা অত্যন্ত অসহায় ও দরিদ্র। তাৎক্ষণিক ২৫ হাজার টাকা দিলেও প্যানকেয়ার হসপিটাল বাকী টাকার জন্য রোগীকে কেবিনে তালাবদ্ধ করে স্বজনদের চাপ প্রয়োগ করেন।
একপর্যায়ে, প্যানকেয়ারের দাবিকৃত বাকী টাকা সংগ্রহ করে হসপিটালে আসলে তারা টাকা রেখে বলেন, রোগী নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে আছে। আপনারা সেখানে যান। এরপর রোগীর স্বজনেরা দ্রুত নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে গেলে দেখেন তাদের রোগী মৃত অবস্থায় হাসপাতালের বারান্দায় পড়ে রয়েছে।
নোয়াখালীর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক কর্মকর্তা (আরএমও) সৈয়দ মহি উদ্দিন আবদুল আজিম জানান, ওই রোগী বিষ খেয়ে ১৯ আগস্ট দিবাগত রাত প্রায় ১টার দিকে আমাদের এখানে ভর্ত্তি হয়। পরবর্তীতে, রোগীর স্বজনেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারী হাসপাতালে নিয়ে যান। ২০ আগস্ট পুনরায় আমাদের হাসপাতালে তাকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্যে মর্গে রয়েছে।
জেলার সিভিল সার্জন ডা. মাসুম ইফতেখার বলেন, মৃতের স্বজনদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নাইমা নুসরাতকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী এক কর্মদিবসের ভেতরেই তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। রিপোর্ট পেলে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে প্যানকেয়ার হসপিটালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মানিকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।