গত তিন মাসে স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় এ উপলক্ষে জেলা শহর মাইজদীর একটি রেস্তোরাঁয় এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংগঠনের সভাপতি লায়লা পারভীন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত তিন মাসে নির্যাতিতদের মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ১০ জন নারী ও শিশু। যাঁদের বয়স ৪-২৮ বছরের মধ্যে। অপহৃত হয়েছে তিনজন বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার ছাত্রী। আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে পাঁচটি, মাদ্রাসাশিক্ষক দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক শিশু। ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে এক নারীকে। আর দিনের বেলায় বাসায় ঢুকে মা ও মেয়েকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে একটি।
নারী অধিকার জোটের উপস্থাপন করা প্রতিবেদনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নারী ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে এলেই থানা-পুলিশ মামলা গ্রহণ করে। সে ক্ষেত্রে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে মনে হতে পারে। তবে জেলা পুলিশ বরাবরই নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করে এবং এ বিষয়ের মামলা বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে। এ ছাড়া অভিযুক্তদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হয়।
নতুন আঙ্গিকে নারীর প্রতি সহিংসতা সংগঠিত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ঘরে-বাইরে, রাস্তাঘাটে, গণপরিবহনে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কোথাও নারী নিরাপদ নন। স্বামীর বাড়িতে গৃহবধূর মৃত্যুর ঘটনাকে আত্মহত্যা কিংবা নারীর মানসিক সমস্যা বলা হচ্ছে, নেওয়া হচ্ছে অপমৃত্যুর মামলা। এখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জোরালো ভূমিকা প্রয়োজন। সত্যিই কি আত্মহত্যা নাকি খুন করে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। নারী যাতে ঘরে-বাইরে, রাস্তাঘাটে, গণপরিবহনে নিরাপদে চলাফেরা করতে পারেন, সে পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে।
প্রতিবেদন উপস্থাপনকালে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নোয়াখালী পল্লি উন্নয়ন সংস্থার (এনআরডিএস) নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়াল, নারী অধিকার জোটের সদস্য ও বিনোদপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সংরক্ষিত আসনের নারী সদস্য রৌশন আক্তার ওরফে লাকি, সদস্য ফৌজিয়া সুলতানা, মিনু আরা, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী গোলাম আকবর প্রমুখ।