বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গত কয়েক বছর ধরে আমরা সভা করছি, দাবি জানাচ্ছি, মিছিল করেছি। কিন্তু আমরা একটা জিনিস করিনি, সেটি হলো হরতাল। আমরা অবরোধ করিনি। পদযাত্রা করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের সকল হেডকোয়ার্টার দখল করে নেব। আমরা হরতাল-অবরোধ দেইনি, পদযাত্রা করে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সরকার ফেলে দেব।
শুক্রবার (১৪ জুলাই) বিকেলে নোয়াখালীর শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম মাঠে বৃহত্তর নোয়াখালীর পাঁচ জেলার ‘দেশ বাঁচাতে মেহনতি মানুষের পদযাত্রা’ কর্মসূচির আগে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, কৃষক ভাইদের অবস্থা সবচেয়ে বেশি খারাপ। আগে সার ৩০০ টাকা বস্তা ছিল, এখন ১২০০। সারের দাম বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের দাম তিনগুণ, চারগুণ, পাঁচগুণ বেড়েছে। মানুষ সেচ করতে পারে না। বীজের দাম বেড়ে গেছে। অথচ ফসল বাজারে বিক্রি করতে গেলে দাম পায় না। কি এক দেশে আমরা বাস করি।
মসজিদের খুতবা সরকার ঠিক করে দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, শুক্রবার জুমার খুতবায় কী বলবে কী বলবে না তা সরকার ঠিক করে দেয়। বলে দেয় এই খুতবা পড়বেন আর এই খুতবা পড়বেন না। আমাদের খুতবাও নিয়ন্ত্রণ করবে তারা। আমাদের অনেক আলেম-উলামাকে গ্রেপ্তার করেছে, ফাঁসি দিয়েছে অনেককে, খুন করেছে অনেককে। আমাদের নেতাদেরকে বিনা কারণে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে সাজা দিয়েছে। তার দৃষ্টান্ত দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
মির্জা ফখরুল বলেন, মিথ্যা মামলায় আমাদের নেত্রীকে সাজা দিয়ে কারাগারে রেখেছে সরকার। এক দিন দুই দিন না, ২০০৮ সাল থেকে বন্দি রেখেছে সরকার। তিনি এখন বাসায় আছেন, কিন্তু তিনি বাসায় ছিলেন না। তিনি একটা অন্ধকার রুমে ছিলেন। সেটি ছিল স্যাঁতস্যাঁতে। পলেস্তারা খসে পড়তো। ইঁদুর দৌড়াদৌড়ি করতো। যিনি গণতন্ত্রের জন্য আপসহীন হিসেবে সব সময় ছিলেন। তিনি আপনাদের বৃহত্তর নোয়াখালীর সন্তান। আজকে খালেদা জিয়া গৃহবন্দী, তাকে চিকিৎসার জন্য বাহিরে যেতে দেয় না এই ভয়াবহ সরকার।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান তরুণ প্রজন্মের নেতা। যার দিকে সাড়া বাংলাদেশ তাকিয়ে আছে। যিনি অত্যন্ত পরিশ্রম করে আমাদেরকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সেই নেতা মিথ্যা মামলায় নির্বাসিত হয়েছেন। তাকে একটার পর একটা মিথ্যা মামলা দিয়ে সাজা দিয়েছে, শুধু তাই নয় তাকে নির্যাতন করে কোমর ভেঙে দিয়েছে। এই অবস্থা থেকে আমরা মুক্তি চাই। আমরা খালেদা জিয়াকে বাসায় দেখতে চাই না, আমরা তাকে নোয়াখালীতে দেখতে চাই এবং বাহিরে দেখতে চাই। সব থেকে বড় জিনিস যেটা, সেটা হলো আমরা আমাদের ভোটটা দিতে চাই। আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব।
কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবদিন ফারুক, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে পদযাত্রাটি শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামের সামনে থেকে শুরু হয়ে একলাশপুর বাজারে গিয়ে শেষ হয়। কৃষক দল, শ্রমিক দল, তাঁতী দল ও মৎসজীবী দলের আয়োজনে ফেনী, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর ও নোয়াখালীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এই পদযাত্রায় অংশ নেন।