• শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
কাদের মির্জার নিপীড়নের শিকার বিএনপি-জামায়াত-আওয়ামী লীগও জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে টিকা বিষয়ক সেমিনার ডিজেল জেনারেটর নাকি গ্যাসোলিন জেনারেটর কোনটি ব্যবহার করা উচিৎ নোয়াখালী বিএডিসিতে তথ্য চাইতে গেলে দুই সাংবাদিকের উপর হামলা গণপূর্ত বিভাগের বন্দোবস্তের পাঁচগুণ জায়গা অবৈধভাবে দখল নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকসহ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ নোয়াখালীতে  প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন  ১০ম গ্রেড সহকারীদের শুধু দাবী নয় এটা তাদের নূন্যতম অধিকার নোয়াখালীতে স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা,স্বামী আটক টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীতে আবার বন্যার আশঙ্কা

নোয়াখালী জেলার চিহ্নিত মাদককারবারীদের ঘুম হারাম : মু আবদুল হামিদ

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : শনিবার, ১ জুলাই, ২০২৩

নয়া সকাল:
সারাদেশের ন্যায় নোয়াখালীর আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে মরন নেশা ইয়াবা,ভয়ংকর মাদক আইচ, হেরোইন, ফেনসিডিলসহ বিভিন্ন মাদক।মাদকের করাল গ্রাস থেকে যুবসমাজকে বাঁচাতে বর্তমান সরকারের রয়েছে নানাবিধ উদ্যেগ।নোয়াখালী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগ সরকারের উদ্যেগকে বাস্তবে পরিণত করতে কাজ করে যাচ্ছেন।এ বিভাগে সহকারী পরিচালক হিসেবে মুহাম্মদ আবদুল হামিদ গত বছর (২৯ মে)যোগদান করেন। তাঁর যোগদানের পর হতে নোয়াখালী জেলার চিহ্নিত মাদককারবারীদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। আর এতে জেলার সচেতন নাগরিক সমাজে ফিরেছে স্বস্তি। মাদকের ভয়াবহতা ও নিয়ন্ত্রণে তাঁর নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ সম্পর্কে একান্ত সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নয়া সকাল এর সম্পাদক জুয়েল রানা লিটন ।প্রশ্নোত্তর পর্বে এ সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হলো।

নয়া সকাল: এ জেলায় যোগদানের পর হতে গত ১ বছরে আপনার উল্লেখযোগ্য মাদক উদ্ধার অভিযান ও মাদককারবারী গ্রেফতার প্রসঙ্গে জানতে চাই?
মু আবদুল হামিদঃ আমি এ জেলায় গত ২৯ মে যোগদান করি।যোগদান করে জেলার মোট ৯ টি উপজেলার স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে মাদকের ভয়াবহতা সম্পর্কে ও অপব্যবহার নিয়ে কর্মশালা করি।আর এতে আমি বিপুল সাড়া পেয়েছি। গত জুন থেকে অর্থ্যাৎ ২০২২ -২৩ অর্থবছরে মোট ২ হাজার ১০ টি অভিযান পরিচালনা করি।এর বিপরীতে ২ হাজার ২শত দশটি মামলা দায়ের হয়।এর মধ্যে ৩০ টি ছিল মোবাইল কোর্ট।ওসব মামলায় ২৬৭ জনকে গ্রেফতার করে কোর্টে প্রেরন করি।এখানে যারা পৃষ্ঠপোষকতা মদদদাতা ব্যক্তিদেরকে আইনের আওতায় আনা হয়।এর আগে আমরা বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার করেছি।এর মধ্যে ইয়াবা ছিলো ৬৪ হাজার ৬শত উনআশি পিস,৫৮ গ্রাম আইচ, ১১৪ কেজি গাঁজা, ১৮৪ বোতল বিদেশি ,১২ ক্যান বিয়ার,১৩ লিটার দেশীয় চোলাই মদ,৪২০ লিটার ওয়াস,৪৭৮ বোতল ভারতীয় ফেনসিডিল, ৪৪৮ লিটার রেক্টিফাইড স্পিরিট,মাদক কাজে ব্যবহৃত ৪৭ টি মোবাইল, দেশূয় বন্দুক ১টি,এলজি ১টি,২ টি ককটেল বোম্ব,১১ টি কার্তুজ,৩টি বুলেট, বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ১টি,ও ১ টি কাভার্ট ভ্যান যেখানে ৩ কোটি টাকা মূল্যের পাকিস্তানি কাপড়ের মধ্যে রাখা মাদকও ছিলো, নগদ ৯ লক্ষ ৭ হাজার টাকা ও ২টি মোটর সাইকেল। এসময় মাদককারবারীরা বিভিন্ন কৌশলে মাদক পাচার করছে।আমরাও তাদের ধরার জন্য আমাদের পরিকল্পনা আপডেট করছি।তবে অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় নোয়াখালী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগ অনেক বেশি এ্যাক্টিভলি কাজ করে যাচ্ছে।
নয়া সকাল: মাদকের ভয়াবহতা ও ঝু্ঁকি সম্পর্কে কি বলবেন?
মু আবদুল হামিদ: বাংলাদেশে সুনির্দিষ্টভাবে কোনো মাদক উৎপাদিত হয় না।আপনারা জানেন যে, পৃথিবীতে মাদক উৎপাদনকারী ২টি বলয় আছে।এর মধ্যে একটি গোল্ডেন ট্রায়াঙেল যেখানে মিয়ানমার,লাউস,কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড এবং অপরদিকে আছে গোল্ডেন ক্রিসেন্ট যেটি বাংলাদেশের পশ্চিমে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইরান।মাঝখানে হচ্ছে আমার প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ। এই দুই বলয়ের দিক থেকে যখন মাদক পাচার হয় তখন তার একটা অংশ কিন্তু এদেশেও আসে। আমরা এটাকে ডেমোগ্রাফি ডিভিডেন্ড বলে থাকি।যুব সমাজের দিক থেকে বাংলাদেশ সবার দিক থেকে এগিয়ে আছে।আর এ বৃহৎ যুবসমাজের অংশীদারত্বের কারণেই আন্তর্জাতিক মাদককারবারীদের টার্গেট বাংলাদেশ। যার ফলে দুই বলয়ের দিক থেকে মাদক ঢুকছে। যেহেতু নোয়াখালী জেলা সীমান্তবর্তী জেলা নয়, সেহেতু কিছুটা কম ঝুঁকি আছে। তবে সীমান্তবর্তী জেলা থেকে এ জেলার যুবসমাজকে টার্গেট করে মাদকের একটি চেইন রুট সৃষ্টির চেষ্টা করছে।তবে একে মোকাবেলা করার জন্য মাদক নিয়ন্ত্রণ বিভাগের রয়েছে আলাদা নজরদারি।
নয়া সকাল: আপনারা প্রায়শই স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীদের নিয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করেন,এর সামাজিক প্রতিক্রিয়া কী?
মু আবদুল হামিদ: মাদকের ডিমান্ড রিডাকশনের জন্য আমরা শিক্ষার্থী ছাড়াও সমাজের বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষের সাথে যোগাযোগ রাখি।আবার এসব কর্মশালা থেকে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মাদকের কুফল সম্পর্কে অবগত হয়।আমরা আমাদের হটলাইনের নম্বরগুলো উম্মুক্ত করে দেই।তারা আমাদের বিভিন্ন তথ্য দেয়।এর ফলে আমাদের কাজ আরো সহজ হয়ে যায়।
নয়া সকাল: নোয়াখালীতে প্রকৃত মাদক বিক্রেতার সংখ্যা কত?
মু আবদুল হামিদ : ঠিক ওভাবে আমরা সংখ্যা প্রকাশ করতে পারি না।তবে মাদককারবারীদের তথ্য প্রতিনিয়ত হালনাগাদ হয়।তাদের নাম ডাটাবেইজ আছে।আমরা সেখান থেকে নিয়ে অভিযান পরিচালনা করি।
নয়া সকাল: নোয়াখালীতে মাদকাসক্তদের পূনর্বাসনের জন্য কোনো মাদক নিরাময় হাসপাতাল নেই।আপনি কী মনে করেন এরকম একটি হাসপাতাল এ জেলায় প্রয়োজন আছে?
মু আবদুল হামিদ :হ্যাঁ, অবশ্যই প্রয়োজন আছে।বর্তমান সরকারের একটি পরিকল্পনা রয়েছে প্রত্যেক জেলায় ১ টি করে ১০০ শয্যা বিশিষ্ট মাদক নিরাময় হাসপতাল স্হাপনের।যুবসমাজের অতিমাত্রায় ঝুঁকে পড়ার কারণে সরকার এটা নিয়ে কাজ করছে।বেসরকারিভাবে পাশ্ববর্তী জেলাগুলোতে মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র গড়ে ওঠেছে।আমি নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন কর্মশালাগুলোতে এমন একটি হাসপাতাল স্হাপনের উদ্যেগ গ্রহনের জন্য জোর দিয়ে যাচ্ছি। এমন উদ্যেগতা পেলে তাঁকে আমরা স্বাগত জানানো হবে।
নয়া সকাল: মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ বিভাগের জনবল সংকট নিয়ে কিছু বলবেন?
মু আবদুল হামিদ :আপনারা জানেন,মাদক কিন্তু গ্রাম পর্যায়ে পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছে। জেলা থেকে অনেক সময় তাৎক্ষণিক তথ্য পেলেও সঠিক সময় পৌঁছাতে না পারায় এদেরকে আইনের আওতায় আনা যায় না।এজন্য সরকার যদি এ অফিসের বিস্তৃতি উপজেলায় পর্যন্ত নিয়ে যায় তাহলে অচিরেই দেশ থেকে মাদক নির্মূল অনেক সহজ হয়ে যাবে।
নয়া সকাল: ধন্যবাদ।
মু আবদুল হামিদ: আপনাকেও ধন্যবাদ।নয়া সকাল  এর  সকল পাঠক শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ
No comments to show.