নোয়াখালীর সদর উপজেলার নোয়ান্নই, ধর্মপুর ও নোয়াখালী ইউনিয়নের ৩৮ কেন্দ্রের ২৫৯ বুথে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ চলছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকাল থেকে সরেজমিনে কয়েকটি কেন্দ্রে ঘুরে ভোটগ্রহণে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ভোটারদের কাছ থেকে ইভিএম মেশিনে আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর প্রার্থীর এজেন্টরা গোপন কক্ষে প্রবেশ করে মেশিনে চাপ দিয়ে ভোট সম্পন্ন করার অভিযোগ উঠেছে, যার প্রমাণ মিলেছে মিডিয়া কর্মীদের ক্যামেরায়। তবে বেলা ১১টা পর্যন্ত কোনো কেন্দ্রে সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সবগুলো কেন্দ্রে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ইভিএম মেশিনের ত্রুটির কারণে প্রায় কেন্দ্রেই ২০-২৫ মিনিট পর ভোটগ্রহণ শুরু হয়।
সরজমিনে বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, নোয়াখালী ইউনিয়নের পশ্চিম চর উরিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ২ বুথে ভোটারদের কাছ থেকে ইভিএম মেশিনে আঙুলের ছাপ নেওয়ার পর এক প্রার্থীর এজেন্ট ভোটারদের সঙ্গে গোপন কক্ষে প্রবেশ করে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করছেন। তবে ওই এজেন্ট কোন প্রার্থীর তা নিশ্চিত করতে পারেনি ভোটাররা। এসব বিষয় নিয়ে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে এজেন্ট, পোলিং, সহকারী প্রিজাইডিং ও প্রিজাইডিং কর্মকর্তার বাকবিতণ্ডা হতেও দেখা গেছে। সকাল সোয়া ১০টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হয়েছে প্রায় ৫০টি।
কয়েকজন নারী ভোটার অভিযোগ করে বলেন, ভোট দেওয়ার জন্য শীত ও কুয়াশা উপেক্ষা করে ভোর বেলা থেকে এসে চর উরিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সকাল ১০টার দিকে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের পর প্রথমে দায়িত্বরতরা আইডিকার্ড দেখে তাদের আঙুলের ছাপ নেন। পরবর্তীতে গোপন কক্ষে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে একজন এজেন্ট গোপন কক্ষে এসে বোতাম চেপে ভোট সম্পন্ন করে আমাদের বুথ থেকে বের করে দেন। এ বিষয়ে একাধিক ভোটার প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে অভিযোগ করলেও তিনি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ভোটের অনিয়ম নিয়ে কেন্দ্রের বাইরে থাকা সাধারণ ভোটার ও প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, কেন্দ্র পরিদর্শনে যাওয়া সংবাদিকদের চোখে এমন দৃশ্য ধরা পড়লে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন টিপুকে জানানোর পর উনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি দাবি করেন, নির্বাচনে দায়িত্বরত পোলিং ও সহকারী প্রিজাইডিংরা ভোটারদের ভোট দেওয়ার পদ্ধতি দেখিয়ে দিচ্ছেন। অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে ইতোমধ্যে তিনি দুইজন এজেন্টকে কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছেন বলেও দাবি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রিটার্নিং কর্মকর্তা জুলকার নাঈম ঢাকা মেইলকে বলেন, চর উরিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটের বুথে অনিয়মের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আমাদের প্রতিনিধি দল পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্ত এজেন্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং একই সঙ্গে প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে মৌখিক সর্তক করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, তিনটি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ২৪, সাধারণ সদস্য পদে ৯৫ জন ও সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে ৬০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। ধর্মপুর ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ৩১ হাজার ৭৫৬ জন, নোয়ান্নই ইউনিয়নে ২৫ হাজার ৮০৯ জন ও নোয়াখালী ইউনিয়নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ২৬ হাজার ৫৭৫ জন ভোটার।