• সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৫২ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
আমাদের দেশকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে: মো. শাহজাহান ফ্যাসিস্ট শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে: জামায়াত নেতা ইয়াছিন আরাফাত নোবিপ্রবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত পাসপোর্টে হয়রানি বন্ধ ও জনগনের সাথে সুসম্পর্ক উন্নয়নে বিদায়ী জেলা পুলিশের ডিআইও-১ এর প্রশংসনীয় উদ্যোগ! নোয়াখালীতে “দ্যা হান্ড্রেড বল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট” এর শুভ উদ্বোধন সুধারামে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে- কামরুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের আর্তনাদ কবিরহাটে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ( বিএমএসএফ)’র  সাধারণ সভা জেলা প্রশাসকের কাছে ৪ শত কম্বল হস্তান্তর করলো ‘আশা’ সোনাপুর পৌর বাসস্ট্যান্ডটি যেভাবে মার্কেটে পরিণত হচ্ছে

নোয়াখালীতে কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিটে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২৩

নোয়াখালী>

কিডনি রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে ২০১৮ সালে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চালু করা হয় ‘কিডনী ডায়ালাইসিস ইউনিট’। এ ইউনিটটি বৃহত্তর নোয়াখালীর (নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর) মধ্যে একমাত্র কিউনি ইউনিট হওয়ায় তিন জেলার লোকসহ পার্শ্ববর্তী কুমিল্লা ও চাঁদপুর জেলার রোগীরাও এখানে চিকিৎসা নিচ্ছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় জনবল না থাকায় এখানে সেবা দিতে প্রতিনিয়ত হিমসিম খেতে হচ্ছে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের। পর্যাপ্ত পরিমাণ জনবল পেলে রোগীদের চিকিৎসা সেবার মান আরও উন্নতি করতে পারবে বলে আশা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ২০১৮ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর ২০টি বেড নিয়ে স্থাপন করা হয় কিডনি ডায়ালাইসিস ইউনিট, যার মধ্যে নেগেটিভ বেড ১২টি, ২টি হেপাটাইটিস বি ভাইরাস পজেটিভ বেড ও হেপাটাইটিস সি ভাইরাস পজেটিভ বেড ৬টি। ডায়ালাইসিসের জন্য ২০টি ও ভর্তি রোগীদের জন্য রয়েছে ১৬টি বেড।

গত বছরের ডিসেম্বরে আরও ৫টি ডায়ালাইসিস বেড আনা হয়েছে, তবে সেগুলো এখনও ইন্সটলেশন করা হয়নি। নামমাত্র মূল্যে (মাত্র ৪শ টাকায়) ডায়ালাইসিস ফি হওয়ায় প্রতিদিন এখানে কিডনি রোগীর চাপ বাড়ছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখানে সেবা নিয়েছেন প্রায় ৪১ হাজার রোগী। প্রাইভেট হাসপাতালে প্রতিবার ডায়ালাইসিসে ২ হাজার ৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা খরচ হওয়ায় অনেকের পক্ষে প্রাইভেটে চিকিৎসা করানো সম্ভব হয় না। খরচ কম হওয়ায় প্রতিদিন বাড়ছে কিডনি রোগীর সংখ্যা, তবে দায়িত্বরতদের চিকিৎসায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন ভর্তি হওয়া রোগী ও তাদের স্বজনরা।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ভর্তি রোগীদের সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিদিন কাজ করে যাচ্ছে সরকারিভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ১জন কনসালটেন্ট, ৩জন মেডিকেল অফিসার, ২২জন সিনিয়র স্টাফ নার্স। এছাড়াও চুক্তিভিত্তিক আউটসোর্সিংয়ে কাজ করছেন ৪জন মেডিকেল অ্যাসিসট্যান্ট, ১জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট, ৫জন মেডিকেল টেকনিশিয়ান, ৩জন রিসিপশনিস্ট, ২জন সুপারভাইজার, ৬জন সিকিউরিটি, ১০জন ওয়ার্ড বয় ও ৬জন আয়া। চুক্তিভিত্তিক পদগুলোতে লোকবল নিয়োগের পাশাপাশি উন্নতমানের সেবার জন্য আরও ১০জন নার্সের প্রয়োজন রয়েছে ইউনিটটিতে।

ডায়ালাইসিসের পাশাপাশি এ প্রতিষ্ঠানটিতে ক্যাথেটার, পার্মানেন্ট ক্যাথেটার, রেনাল বায়োন্সি, এভি ফিস্টুলা রোগিদেরও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় দেড় কোটি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিয়েছে ইউনিটটি। প্রয়োজনীয় জনবল ও সকল ধরনের সাপোর্ট পেলে প্রতিষ্ঠানটি থেকে আরও বেশি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করা সম্ভব হবে।

হাসপাতালে কর্মরতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জনবল সংকটের কারণে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স সহ সকলকে নিয়মিত রুটিনের বাইরে গিয়ে প্রতিনিয়ত অতিরিক্ত কাজ করতে হচ্ছে। এতে করে উন্নত মানের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। ফলে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগের মাধ্যমে রোগীদের উন্নত মানের সেবা নিশ্চিত করবে কর্তৃপক্ষ এমনটাই প্রত্যাশা সবার।

জাকির হোসেন নামের ভর্তি এক রোগীর স্বজন জানান, গত চার মাস আগে তার মায়ের কিডনিতে সমস্যা চিহিৃত হয়। এরপর অসুস্থ অবস্থায় তাকে গত ১০দিন আগে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের কিডনি ইউনিটে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরতদের আন্তরিকতায় বর্তমানে তিনি কিছুটা সুস্থ আছেন। হাসপাতালে রোগীর তুলনায় চিকিৎসক ও নার্স কম। যেহেতু কিডনি সমস্যা মানবদেহের বড় একটি সমস্যা, তাই এখানে যারা চিকিৎসা নিতে আসেন, তাদের উন্নতমানের চিকিৎসা নিশ্চিত করা দরকার, যার জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ করা জরুরি।

কিডনি ইউনিটের ইনচার্জ মোটুসী দ্রং বলেন, নার্সসহ একাধিক পদে আমাদের জনবল সংকট রয়েছে। পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করা হলে এ ইউনিটে ভর্তি রোগীদের উন্নতমানের সেবা নিশ্চিতে আমরা কাজ করতে পারব।

কিডনি বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসক ডা. ফজলে এলাহী খাঁন বলেন, কিডনি ইউনিটে প্রতিনিয়ত রোগীর চাপ বেড়েই চলছে। মাত্র ২০টি বেড থাকায় চিকিৎসা প্রত্যাশী অনেক রোগীকে অপেক্ষমান রাখা হয়। ২০টি মেশিনের মধ্যে মাঝে মাঝে কয়েকটি নষ্ট হয়ে যায়। জনবলের সাথে সাথে এখানে মেশিন ও শয্যা সংখ্যা বাড়ানোও জরুরি।

জনবল সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, পুরো হাসপাতালটি নামে ২৫০ শয্যা হলেও এখানে যে পরিমাণ জনবল আছে, তা দিয়ে ১৫০ শয্যা হাসপাতাল চালানোও কষ্টকর। কিডনি ইউনিটে প্রতিদিন ৬০জনের বেশি রোগী ডায়ালাইসিস সেবা নিচ্ছেন, যা মাস শেষে পনের শতাধিক হয়। ডায়ালাইসিস তুলনায় আমাদের জনবল অনেক কম। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জনবল নিয়োগের ব্যবস্থা করে সেবার মান বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ
No comments to show.