• মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:২৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
আমাদের দেশকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে: মো. শাহজাহান ফ্যাসিস্ট শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে: জামায়াত নেতা ইয়াছিন আরাফাত নোবিপ্রবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত পাসপোর্টে হয়রানি বন্ধ ও জনগনের সাথে সুসম্পর্ক উন্নয়নে বিদায়ী জেলা পুলিশের ডিআইও-১ এর প্রশংসনীয় উদ্যোগ! নোয়াখালীতে “দ্যা হান্ড্রেড বল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট” এর শুভ উদ্বোধন সুধারামে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে- কামরুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের আর্তনাদ কবিরহাটে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ( বিএমএসএফ)’র  সাধারণ সভা জেলা প্রশাসকের কাছে ৪ শত কম্বল হস্তান্তর করলো ‘আশা’ সোনাপুর পৌর বাসস্ট্যান্ডটি যেভাবে মার্কেটে পরিণত হচ্ছে

আল্লাহ তাদের দুনিয়া-আখিরাতে অভিশপ্ত করেন

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : বৃহস্পতিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৩

sharethis sharing button

আরবি লানত শব্দের অর্থ অভিশাপ। পবিত্র কোরআনে এ শব্দটি অনেক জায়গায় এসেছে। এসব জায়গায় আল্লাহ তাআলা নানা শ্রেণির অবাধ্য মানুষকে অভিশাপ দিয়েছেন। এসব অভিশপ্ত মানুষের কঠিন পরিণামের কথাও পবিত্র কোরআনে বিবৃত হয়েছে। নিচে সংক্ষেপে আট শ্রেণির মানুষের অভিশপ্ত হওয়ার কারণ ও পরিণামের কথা প্রতিদিনের সংবাদ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:

১. কুফুরি : কুফর শব্দের অর্থ অস্বীকার করা। ইসলামের পরিভাষায় আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা.)-কে অস্বীকার করার নামই কুফর। যারা কুফরি করে তাদের কাফির বলা হয়। কুফরি সবচেয়ে বড় গুনাহ। কাফিরদের প্রতি রয়েছে আল্লাহর অভিশাপ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘যারা কুফরি করে এবং কাফির অবস্থায় মারা যায়, তাদের প্রতি আল্লাহ, সব ফেরেশতা ও মানুষের অভিশাপ।’ (সুরা বাকারা: ১৬১)

২. খুন : হত্যা, রক্তপাত ও খুনোখুনি ইসলামে জঘন্য অপরাধ। এ কাজ আল্লাহ মোটেও পছন্দ করেন না। তাই তিনি খুনি ও ঘাতককে অভিশপ্ত বলেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ইচ্ছা করে কেউ কোনো মুমিনকে হত্যা করলে তার শাস্তি জাহান্নাম। সেখানে সে স্থায়ী হবে। আল্লাহ তার প্রতি রুষ্ট হবেন। তাকে অভিশাপ দেবেন। তার জন্য প্রস্তুত রাখবেন মহা শাস্তি।’ (সুরা নিসা: ৯৩)

৩. মিথ্যা বলা : মিথ্যা বলা খুবই জঘন্য কাজ। মিথ্যুকদের প্রতি আল্লাহ তাআলা অভিশাপ দিয়েছেন। তিনি এরশাদ করেন, ‘তোমার কাছে জ্ঞান আসার পর যে ব্যক্তি এ বিষয়ে তোমার সঙ্গে তর্ক করে তাকে বলো, এসো, আমরা আহ্বান করি আমাদের পুত্রদের এবং তোমাদের পুত্রদের, আমাদের নারীদের এবং তোমাদের নারীদের, আমাদের নিজেদের এবং তোমাদের নিজেদের। তারপর আমরা বিনীত আবেদন করি এবং মিথ্যুকদের আল্লাহর অভিশাপ দিই।’ (সুরা আলে ইমরান: ৬১)

৪. মুনাফিকী : মুনাফিক শব্দের অর্থ প্রতারক। ইসলামের পরিভাষায় মুখে ইমানের কথা বলে অন্তরে কুফরি লালন করার নামই মুনাফিকি। মুনাফিকদের আল্লাহ অভিশাপ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘মুনাফিক নারী-পুরুষ ও কাফিরদের আল্লাহ জাহান্নামের আগুনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। সেটাই তাদের জন্য যথেষ্ট। আল্লাহ তাদের অভিশাপ দিয়েছেন। তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী শাস্তি।’ (সুরা তাওবা: ৬৮)

৫. বিশ্বাসঘাতকতা : আহদ শব্দের অর্থ ওয়াদা বা অঙ্গীকার। ওয়াদা ভঙ্গ করা তথা বিশ্বাসঘাতকতা করা ইসলামের দৃষ্টিতে অমার্জনীয় অপরাধ। বিশেষ করে যখন কেউ আল্লাহর কাছে দেওয়া ওয়াদা ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের অভিশাপ দেন। আল্লাহ বলেন, ‘অঙ্গীকার ভাঙার জন্য আমি তাদের অভিশাপ দিয়েছি। তাদের হৃদয় কঠোর করেছি। তারা শব্দগুলোর আসল অর্থ বিকৃত করে। তাদের যা উপদেশ দেওয়া হয়েছিল তার একাংশ তারা ভুলে গেছে। তাদের মধ্যে অল্পসংখ্যক ছাড়া সবাইকে তুমি সর্বদা বিশ্বাসঘাতকতা করতে দেখবে। …’ (সুরা মায়িদা: ১৩)

এ আয়াতে আল্লাহর ওয়াদা ভঙ্গ করার অর্থ হলো, মানুষের আত্মা সৃষ্টির পর আল্লাহ ওয়াদা নিয়েছিলেন যে, তারা পৃথিবীতে এসে তাঁর প্রতি ইমান আনবে। সকল মানুষ এক বাক্যে তা মেনে নিয়েছিল। (সুরা আরাফ: ১৭২)

৬. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করা : আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখার ব্যাপারে ইসলাম বেশ জোর দিয়েছে। আল্লাহ তাআলা তাঁর ইবাদত করার পরই পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ও সমাজের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষার কথা বলেছেন। তাই এ বন্ধন ছিন্ন করা আল্লাহর কাছে বড় অপরাধ। এ কারণেই এটি অভিশপ্ত হওয়ার কারণ। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর সঙ্গে দৃঢ় অঙ্গীকার করার পর যারা তা ভাঙে, যে সম্পর্ক আল্লাহ অক্ষুণ্ন রাখতে আদেশ দিয়েছেন তা ছিন্ন করে এবং পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করে, তাদের জন্য রয়েছে অভিশাপ এবং তাদের জন্য রয়েছে মন্দ নিবাস।’ (সুরা রাদ: ২৫)

৭. সাধ্বী নারীদের অপবাদ দেয়া : মানুষের সম্মান আল্লাহর কাছে খুবই পবিত্র। বিশেষ করে নারীর সম্মান রক্ষায় ইসলাম বেশ জোর দিয়েছে। কাউকে ব্যভিচারের অপবাদ দেওয়া ইসলামে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন অপরাধে জড়িত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা অভিশপ্ত বলেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘সাধ্বী, সরলমনা ও ইমানদার নারীদের প্রতি যারা অপবাদ দেয় তারা দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশপ্ত। তাদের জন্য রয়েছে মহা শাস্তি।’ (সুরা নুর: ২৩)

৮. রাসুল (সা.)-এর নামে কুৎসা রটনা : মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর প্রিয়তম বান্দা। তাঁর অনন্য-অতুলনীয় আখলাক-শিষ্টাচারের নজির পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই। তাই তাঁর নামে কুৎসা রটানো, মন্দভাবে তাঁকে উপস্থাপন করা আল্লাহর অভিশাপ ও অসন্তুষ্টির কারণ। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ ও রাসুলকে যারা পীড়া দেয়, আল্লাহ তাদের দুনিয়া ও আখিরাতে অভিশাপ দেন। তাদের জন্য তিনি প্রস্তুত রেখেছেন লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা আহজাব: ৫৭)

অভিশপ্তদের পরিণাম : আল্লাহ যাদের অভিশাপ দিয়েছেন, তাদের কঠিন পরিণতির কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন। পার্থিব জীবনে আল্লাহ তাদের সাহায্য করবেন না। পরকালে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি এবং নিকৃষ্ট পরিণাম। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘এরাই তারা, যাদের আল্লাহ অভিশাপ দিয়েছেন। আল্লাহ যাকে অভিশাপ দেন, কখনো তুমি তার কোনো সাহায্যকারী পাবে না।’ (সুরা নিসা: ৫২)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আল্লাহ তাদের প্রতি রুষ্ট হয়েছেন। তাদের অভিশাপ দিয়েছেন। তাদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন জাহান্নাম। তা কত নিকৃষ্ট আবাসস্থল!’ (সুরা ফাতহ: ৬) আরও এরশাদ হচ্ছে, ‘তাদের জন্য রয়েছে অভিশাপ। তাদের জন্য রয়েছে নিকৃষ্ট আবাস।’ (সুরা গাফির: ৫২)

অন্য আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তাদের দুনিয়া-আখিরাতে অভিশপ্ত করেন। তাদের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছেন লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।’ (সুরা আহযাব: ৫৭)

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ
No comments to show.