তার মূল নাম ছিল রুমাইসা, রুমাইলা বা গুমাইসা। তাঁর প্রথম স্বামী মালিক বিন নজর। উম্মে সুলাইম ইসলাম গ্রহণ করলে মালিক অসন্তুষ্ট হয়ে শামে চলে যান। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। প্রথম স্বামীর ঔরসে বিখ্যাত সাহাবি আনাস (রা.)-এর জন্ম হয়। (আসাদুল গাবাহ: ৩৪৫/৭)
উম্মে সুলাইম (রা.)-এর স্বামীর মৃত্যুর পর অনেকেই তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। সাহাবি আবু তালহা আনসারিও প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু তখনো তিনি ইসলাম গ্রহণ করেননি। ফলে উম্মে সুলাইম (রা.) তাঁর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। কিন্তু মানুষ হিসেবে আবু তালহাকে পছন্দ হয় তাঁর। তাই ইসলাম গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন— তুমি ইসলাম গ্রহণ করলে সেটাই হবে আমার মোহরানা। এছাড়া আমি আর কিছু চাই না। (তাবাকাতে ইবনে সাদ: ৪২৬/৮)
আবু তালহার ভালো লাগে উম্মে সুলাইম (রা.)-এর আহ্বান। তিনি ইসলাম গ্রহণ করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর যুগপৎ এই সিদ্ধান্ত আরবে বেশ আলোচনার সৃষ্টি করে। ইসলামের ইতিহাসে এটিই ছিল সবচেয়ে মূল্যবান মোহর।
উম্মে সুলাইম (রা.) একজন আদর্শ মা-ও ছিলেন। সন্তানদের তিনি ইসলামের জন্য উৎসর্গ করেছিলেন। শিশুকালে তাদের ইসলাম ও মুসলিম-জীবনে অনুপ্রাণিত করেন। রাসুল (স.) যখন মদিনায় হিজরত করেন, তখন আনাস (রা.)-এর বয়স ছিল ১০।
সেই সময়ের ব্যাপারে আনাস (রা.) বলেন, আমার হাত ধরে মা রাসুল (স.)-এর কাছে নিয়ে যান। মা রাসুল (স.)-এর কাছে এসে বলেন— ‘হে আল্লাহর রাসুল, আনসারের সব নারী ও পুরুষ আপনাকে কোনো না কোনো কিছু হাদিয়া দিয়েছে। আপনাকে দেওয়ার মতো আমার কাছে কিছু নেই।
আমার কাছে কেবল আমার ছেলে আছে। আপনি ওকে হাদিয়া হিসেবে গ্রহণ করুন, সে আপনার প্রয়োজনের সময় সহযোগিতা ও সেবা-যত্ন করবে।’ (মুসলিম: ২৪৮০)
সন্তানের সুশিক্ষা, শিষ্টাচার, নিবিড় পরিচর্যা ও বেড়ে ওঠার জন্য তাঁর উদ্যোগ চিরভাস্বর। মহানবী (স.)-এর হাতে সন্তানকে সঁপে দিয়ে তিনি তিনি বুদ্ধিমত্তায় অনন্যতার পরিচয় দিয়েছেন। পাশাপাশি চির সৌভাগ্যের অংশীদার হয়েছেন। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সাহাবিদের জীবনী থেকে শিক্ষা নেওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।