তথ্য দেখা যায়, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পাঁচ মাসে কৃষকরা মেয়াদ শেষে ফেরত দিয়েছেন ১২ হাজার ৮৭১ কোটি টাকা, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে দুই হাজার ৫৩২ কোটি টাকা বেশি। আগের বছর একই সময়ে ফেরত দেওয়া ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা।
কৃষিঋণে খেলাপি ঋণের পরিমাণও শিল্প-ট্রেডিং ঋণের চেয়ে কম। নভেম্বর মাস শেষে কৃষিঋণে খেলাপির হার দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ২৪ শতাংশ। ব্যাংকিং খাতে বিতরণ করা কৃষি ঋণ স্থিতি ৫০ হাজার ২০৭ কোটি টাকার বিপরীতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ চার হাজার ১৩৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। অন্যদিকে ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের হার ৯ শতাংশের ওপরে। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছর শুরুই হয় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের অভিঘাত নিয়ে। এ সময় দেশে মূল্যস্ফীতি সর্বোচ্চে পৌঁছে। এর প্রভাব বেশি পড়ে কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের ওপর। বেড়েছে জীবন নির্বাহের খরচ। আয়ের চেয়ে খরচ বেড়ে গেছে। খরচ মেটাতে সাধারণ আয়ের মানুষ হিমশিম খাচ্ছে। এমন অবস্থাতেও কৃষকরা মেয়াদ শেষে বেশি অর্থ ফেরত দিয়েছেন।
বাণিজ্যিক ৫৪ ব্যাংকের বিতরণ করা মোট ঋণের ২ শতাংশ কৃষিঋণ হিসেবে বিতরণ করে। এর বাইরে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের বিতরণ করা ঋণের পুরোটাই কৃষিঋণ। শস্য, কৃষিযন্ত্র, সেচযন্ত্র, পশুপালন ও পোলট্রি ফার্ম, মৎস্যচাষ, শস্য সংরক্ষণ ও বাজারজাত এবং দারিদ্র্য দূরীকরণে ক্ষুদ্র উদ্যোগে বিতরণে ছোট ছোট ঋণ কৃষিঋণের আওতাভুক্ত। জুলাই-নভেম্বর পাঁচ মাসে এ ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। চলতি বছরে কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা। ঋণ বিতরণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কৃষিঋণ বিতরণও বাড়ছে।
সকল বাণিজ্যিক ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণ নিশ্চিত করতে পল্লী অঞ্চলে শাখা না থাকা বা কম শাখার ব্যাংকও এনজিও লিংকেজের মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণ করছে। ক্ষুদ্রঋণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (এমআরএ) নিবন্ধিত এনজিও-র মাধ্যমে কৃষিঋণ নির্দেশনা রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের। মোট কৃষিঋণের প্রায় ৪০ শতাংশ বিতরণ করা হয় এসব ক্ষুদ্রঋণ বিতরণী সংস্থার মাধ্যমে।