• বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
কাদের মির্জার নিপীড়নের শিকার বিএনপি-জামায়াত-আওয়ামী লীগও জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে টিকা বিষয়ক সেমিনার ডিজেল জেনারেটর নাকি গ্যাসোলিন জেনারেটর কোনটি ব্যবহার করা উচিৎ নোয়াখালী বিএডিসিতে তথ্য চাইতে গেলে দুই সাংবাদিকের উপর হামলা গণপূর্ত বিভাগের বন্দোবস্তের পাঁচগুণ জায়গা অবৈধভাবে দখল নোয়াখালীতে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকসহ প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ নোয়াখালীতে  প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন  ১০ম গ্রেড সহকারীদের শুধু দাবী নয় এটা তাদের নূন্যতম অধিকার নোয়াখালীতে স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা,স্বামী আটক টানা বৃষ্টিতে নোয়াখালীতে আবার বন্যার আশঙ্কা

৫শ সিসি ক্যামেরা বসছে রাজধানীতে

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : রবিবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৩

 

 

 

আপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণে ক্লোজড সার্টিক (সিসি) ক্যামেরার গুরুত্ব অপরিসীম। এই ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে অনেক অপরাধীকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সেইসঙ্গে রহস্যভেদ হয়েছে অনেক চাঞ্চল্যকর মামলারও।এই সিসি ক্যামেরার সাহায্যেই বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশের মৃত্যুর ঘটনার রহস্য উন্মোচন করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত ৪ নভেম্বর নিখোঁজের পর ৭ নভেম্বর পুলিশ নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদ থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার দীর্ঘ তদন্ত শেষে র‌্যাব-পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয় ফারদিন আত্মহত্যা করেছেন। শীতলক্ষ্যা নদের সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে ফারদিন লাফিয়ে আত্নহত্যা করেছেন বলে জানায় র‌্যাব। এক্ষেত্রে অন্তত কয়েকশ’ সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে র‌্যাব।

 

শীতলক্ষ্যা নদের ঢাকার প্রান্তে বিআইডব্লিউটিএ’র ঘাটে স্থাপিত সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে ফারদিনের চেহারা স্পষ্ট নয়। তবে র‌্যাবের গোয়েন্দা ইউনিট তার মোবাইল ফোনের অবস্থান ও মোবাইল ফোনের টাওয়ারের তথ্য চুলচেরা বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হয়েছে যে ঘটনার দিন রাত ২ টা ৩৪ মিনিটে ব্রিজের ওপর ফারদিনের মোবাইল ফোনের অবস্থান ছিলো। ওই সময় ব্রিজ থেকে লাফিয়ে পড়ার যে দৃশ্য সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে ধরা পড়েছে-সেটি ফারদিনের।

তবে এই ঘটনায় নাখোস ফারদিনের বাবা কাজী নুরুদ্দীন। তিনি এই মামলায় নারাজি দিবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে যেটিকে ফারদিন বলা হচ্ছে, সেটি আসলে স্পষ্ট নয়। ব্রিজের ওপর থেকে নিচে পড়ে যাওয়া বস্তুটি স্পষ্ট নয়। সেটি যে ফারদিন-তাও নিশ্চিত নয়।

শুধু ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনাই নয়, সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি মামলার তদন্তে অন্যান্য অপরাধ সূত্র দিয়ে নিশ্চিত হতে না পারলেও সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দিয়ে তদন্তকারী সংস্থা নিশ্চিত হয়েছে।

তদন্ত আরও গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে আনতে নতুন করে গুরুত্বপূর্ণস্থানে আরও ৫ শতাধিক সিসি ক্যামেরা বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রযুক্তিবিদ তানভীর জোহা বলেন, আদালতের কাছে আইসো সার্টিফাইড সফটওয়্যার দিয়ে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করা রিপোর্ট গ্রহণযোগ্য হয়। কিন্তু দেশে এখনও আইসো সার্টিফাইড সফটওয়্যার আসেনি। এদেশে ইমেজ ফরেনসিক করার মতো বা বিশ্লেষণ করার মতামত ডিজিটাল নয়, এ্যানালগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেয়া হয়।

তার মানে সর্ব গ্রহণযোগ্য এমন কোনো ডিজিটাল আলামত এখনও ইমেজ ফরেনসিকে ব্যবহার হয় না। আর ইমেজ ফরেনসিক করার সময় জাতীয় পরিচয়পত্র ভান্ডারের সাথে ট্যাগ বা সম্মিলিত থাকতে হবে।

তা না হলে ইমেজ ফরেনসিক থেকে কিভাবে অপরাধীকে শনাক্ত করবে? খালি চোখে ছবি দেখে শনাক্ত করার তথ্য আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

এ বিষয়ে ডিএমপি’র মিডিয়া এ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার ফারুক হোসেন জানান, আগে থেকেই ঢাকার বিভিন্ন পয়েছে ডিএমপির উদ্যেগে ৬৭৫টি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

এতে কোনো ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষনিক অপরাধীকে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি ডিএমপির আলোকচিত্র শাখাও নানাভাবে রাজধানী জুড়ে তৎপর থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে আরও নিছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন করে ৫শতাধিক ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।

সূত্র জানায়, ২০০৭ সালে রাজধানীর ৪৩টি পয়েন্টে ১৮৫টি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু হয়। পর্যবেক্ষণের জন্য আব্দুল গনি রোডে পুলিশের কমান্ড সেন্টারে একটি মনিটরিং কক্ষ খোলা হয়। পরে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত না করার কারণে ওই প্রজেক্ট বাতিল হয়ে যায়।

২০১২ সালে তৎকালীন ডিএমপি কমিশনার ড. বেনজীর আহমেদের উদ্যোগে রাজধানীতে একটি সিসি ক্যামেরা প্রকল্প চালু হয়। সম্পূর্ণ বেসরকারি অর্থায়নে ‘ল অ্যান্ড অর্ডার কো-অর্ডিনেশন কমিটি’ বা এলওসিসি নামের একটি ট্রাস্ট গড়ে তোলা হয়। বর্তমানে ট্রাস্টের অধীনে গুলশান, বনানী, নিকেতন ও বারিধারা ও ডিওএইচএস এলাকায় ১২শ ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

গুলশানের ১০২ নম্বর রোডের ৮ নম্বর বাড়ি থেকে সিসি ক্যামেরা মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এখানে একটি আধুনিক মনিটরিং সেন্টারও স্থাপন করা হয়েছে, যা সিসিটিভি মনিটরিং সেন্টার নামে পরিচিত।

এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর কমিটির মাধ্যমে প্রশাসনিক কাজ ডিএমপির অপারেশনস বিভাগ, আইসিটি বিভাগ ও এমআইএস শাখার মাধ্যমে নবাব আব্দুল গণি রোডস্থ সেন্ট্রাল কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টারের ৮ম তলা থেকে মনিটিরিং করা হয় ৬৭৫টি সিসি ক্যামেরা।

এই ৫শ সিসি ক্যামেরা উন্নত প্রযুক্তির। এসব ক্যামেরায় স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম সিস্টেম, ফেস ডিটেকশন (চেহারা চিহ্নিতকরণ), গাড়ির নম্বর প্লেট চিহ্নিতকরণ প্রযুক্তি বা এএনপিআরসহ অন্তত ১১ ধরনের সুবিধা পাওয়া সম্ভব হবে।

এই ক্যামেরা প্রকল্পের একটি বিশেষ দিক হচ্ছে ডিজিটাল টহল নিশ্চিত করা। অর্থাৎ গভীর রাতেও নির্জন রাস্তা থাকবে পুলিশের নজরদারিতে।

ক্যামেরায় চেহারা শনাক্তের প্রযুক্তি থাকায় অপরাধী এবং পলাতক আসামিদের সহজেই গ্রেপ্তার করা সম্ভব হবে। চুরি এবং ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ করে কেউ পালিয়ে যাওয়ার সময় সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে ধরা পড়লে-তাকে শনাক্ত করা সম্ভব হবে।

এছাড়া থাকবে স্বয়ংক্রিয় শব্দ চিহ্নিতকরণ ব্যবস্থা। রাজধানীর কোথাও কোনো শব্দ হলে তাৎক্ষণিকভাবে শব্দের বিস্তারিত তথ্যসহ কন্ট্রলরুমে সিগন্যাল চলে যাবে। ফলে পুলিশের ভাষায় ‘শুটিং ইনসিডেন্ট’ বা গোলাগুলির ঘটনা ঘটলে দ্রুততম সময়ে তথ্য পাবে পুলিশ।

এমনকি কতোদূরে গুলি হয়েছে এবং কী ধরনের অস্ত্রের গুলি, তাও চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। ক্যামেরায় থাকবে স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম সিস্টেম। সন্দেহভাজন ব্যক্তি বা বস্তু ক্যামেরায় ধরা পড়ামাত্র সংকেত বেজে উঠবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ
No comments to show.