• মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
আমাদের দেশকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে: মো. শাহজাহান ফ্যাসিস্ট শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে: জামায়াত নেতা ইয়াছিন আরাফাত নোবিপ্রবিতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত পাসপোর্টে হয়রানি বন্ধ ও জনগনের সাথে সুসম্পর্ক উন্নয়নে বিদায়ী জেলা পুলিশের ডিআইও-১ এর প্রশংসনীয় উদ্যোগ! নোয়াখালীতে “দ্যা হান্ড্রেড বল ক্রিকেট টুর্নামেন্ট” এর শুভ উদ্বোধন সুধারামে আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ প্রশাসন সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবে- কামরুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের আর্তনাদ কবিরহাটে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম ( বিএমএসএফ)’র  সাধারণ সভা জেলা প্রশাসকের কাছে ৪ শত কম্বল হস্তান্তর করলো ‘আশা’ সোনাপুর পৌর বাসস্ট্যান্ডটি যেভাবে মার্কেটে পরিণত হচ্ছে

নোয়াখালী শহরে গণপূর্তের শতকোটি টাকার সম্পত্তি বেদখল

নিউজ ডেস্ক
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪

নোয়াখালী।
নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে গণপূর্ত বিভাগের সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে দখলের যেন মহোৎসব চলছে। সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজরদারি না থাকায় প্রভাবশালী মহল, ব্যবসায়ী, আইনজীবী সমিতি, বিভিন্ন ক্লাব ও সমিতির নামে যে যেভাবে পারছেন সরকারি সম্পত্তি দখল করে নিচ্ছেন। সরকারের শত শত কোটি টাকা মূল্যের এসব সম্পত্তি দখলে সহযোগিতায় অনৈতিক সুবিধা গ্রহনের অভিযোগ ওঠেছে গণপূর্ত বিভাগ নোয়াখালীর সদ্য বিদায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী সা’দ মোহাম্মদ আন্দালিব ও তাঁর সেন্ডিকেটের সদস্যদের বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি গণপূর্ত বিভাগ নোয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী সা’দ মোহাম্মদ আন্দালিবের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। এসব সংবাদ প্রকাশের পরই প্রকৌশলী আন্দালিবকে ফেনীতে বদলীর পর আন্দালিব তাঁর স্থলাভিষক্ত ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসানকে দায়িত্ব বুঝিয়ে না দিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপির প্যাডে ভুয়া ডিও লেটার তৈরী করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রীকে বোকা বানিয়ে নিজ বদলি স্থগিত করেন। ঘটনাটি জানাজানি হলে পুনরায় তাকে লালমনির হাট জেলায় বদলির আদেশ দেয় গৃহয়ায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
এরই মধ্যে গত ২৮ এপ্রিল প্রকৌশলী সা’দ মোহাম্মদ আন্দালিবের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে গণপূর্ত বিভাগ নোয়াখালীর তালিকাভুক্ত ঠিকাদাররা। এসময় তাঁরা প্রকৌশলী আন্দালিবসহ তাঁর সিন্ডিকেটের সদস্য গণপূর্ত বিভাগ নোয়াখালীর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. এমদাদুল হক মিঞা, আবেদ মইন উদ্দীন ও সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ হাসানেরও শাস্তি দাবি করেন।
গণপূর্ত বিভাগ নোয়াখালীর তালিকাভুক্ত ঠিকাদার মো.আবু নাছের ও রাজিব হোসেন বলেন, সা’দ মোহাম্মদ আন্দালিব নোয়াখালীতে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে যোগদানের পর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. এমদাদুল হক মিঞা, আবেদ মইন উদ্দীন ও সহকারী প্রকৌশলী জাহিদ হাসানসহ নিজেদের অনুসারী কয়েকজন ঠিকাদারকে নিয়ে সিন্ডিকেট তৈরী করে ইজিপি দরপত্র নিয়ন্ত্রণসহ নানা-দুর্নীতি-অনিয়ম শুরু করেন। শুধু তাই নয়, নোয়াখালী শহরে গণপূর্ত বিভাগের শত শত কোটি টাকা মূল্যের সম্পত্তি এই আন্দালিব সিন্ডিকেটের সহযোগিতায় কোন বন্দোবস্ত ছাড়াই দখল করে নেয় প্রভাবশালীরা। বিনিময়ে কোটি কোটি টাকা অবৈধ উপায়ে হাতিয়ে নেয় প্রকৌশলী আন্দালিব ও তাঁর সিন্ডিকেটের সদস্যরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, জেলা শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সরকারি সম্পত্তিগুলো দখলের উৎসব চলছে। শহরের হাসপাতাল সড়কের মুখের দক্ষিণ পাশে সোনালী ব্যাংক থেকে দক্ষিণে পৌর বাজার পর্যন্ত আধা কিলোমিটার এলাকায় গড়ে ওঠা বেশিরভাগ দোকান মালিকের জায়গার স্থায়ী কোন বন্দবস্ত নেই। তারা গণপূর্ত বিভাগ থেকে ৬৫ ফুট দৈর্ঘ্যের ছোট ছোট ভিটি এক সনা বন্দোবস্ত নিয়ে দেড়শ থেকে ২০০ ফুট পর্যন্ত জায়গা দখল করে ফেলেছে।
একইভাবে শহরের জেলা জজ আদালত ভবন এলাকায় নোয়াখালী আইনজীবী সমিতি, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর কার্যালয় সংলগ্ন জায়গায় সমবায় সুপার মার্কেট, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সড়কের উত্তর পাশে জেলা প্রশাসন কর্মচারি সমিতির নামে জমি দখল, মাইজদী হকার্স মার্কেট থেকে ইসলামিয়া সড়ক এলাকায় একাধিক ক্লাব ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের নামে কয়েক একর সরকারি সম্পত্তি অবৈধভাবে দখল করা হয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরকারি সম্পত্তি দখল করে প্রভাবশালীরা একের পর এক অনুমোদন বিহীন বহুতল স্থাপনা তৈরি করলে জনরোষে পড়ে দুই-একটি অভিযান পরিচালনা করলেও সম্পত্তি রক্ষার দায়িত্বে থাকা জেলা প্রশাসন কিংবা জেলা গণপূর্ত বিভাগ বেশিরভাগ সময়ে নিরব ভূমিকা পালন করেছে। বরং জেলা প্রশাসন ও গণপূর্ত বিভাগের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজসে দখলকারীরা আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে। যার ধারাবাহিকতায় চলছে এসব দখল উৎসব।
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক একাধিক দখলদার জানান, স্থায়ী বন্দোবস্তের জন্য গণপূর্ত বিভাগ ও জেলা প্রশাসনের কাছে ঘুরতে ঘুরতে জুতা ক্ষয় হয়ে গেছে। কিন্তু বন্দোবস্ত মিলছে না। তাই গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মূখিক চুক্তিতে স্থাপনা তৈরী করে ব্যবসা করছেন তারা। অবশ্য এই জন্য জেলা প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে বাৎসরিক মোটা অংকের টাকাও নেন গণপূর্ত বিভাগের কর্মকর্তারা।
তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে গত ২৮ এপ্রিল দুপুরে গণপূর্ত বিভাগ নোয়াখালী কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা ডুকতে চাইলে কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে সাংবাদিকদের ভিতরে প্রবেশ করতে দেয়নি কর্মকর্তারা। যার কারণে অভিযুক্ত নির্বাহী প্রকৌশলী সা’দ মোহাম্মদ আন্দালিব ও উপ-বিভাগীয় এবং সহকারী প্রকৌশলীগনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। এসময় জেলা ডিবি পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি সম্পত্তি ও স্বার্থ রক্ষায় কাজ করছেন তাঁরা। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে তাঁরা একাধিক অভিযান পরিচালনা করে সরকারে বিপুল পরিমান সম্পত্তি উদ্ধার করেছেন। জনস্বার্থে তাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ
No comments to show.